মাসুদ আলম, চলচ্চিত্র প্রতিবেদক: ২০২১ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি পরপারে পাড়ি জমান একুশে পদকপ্রাপ্ত এই অভিনেতা। আজ তার দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। মৃত্যুর আগে বেশ কয়েক বছর ধরে নানান শারীরিক সমস্যায় ভুগেছিলেন এটিএম শামসুজ্জামান। সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজের মাধ্যমে তার রুপালি জগতে পদচারণা শুরু হয় তার ১৯৬১ সালে পরিচালক উদয়ন চৌধুরীর ‘বিষকন্যা’ সিনেমাতে । এর পর ১৯৬৫ সালে অভিনেতা হিসেবে চলচ্চিত্রে আসেন এটিএম শামসুজ্জামান। প্রথম কাহিনি ও চিত্রনাট্যকারের কাজ করেছেন ‘জলছবি’তে । শতাধিক চিত্রনাট্যের কাহিনি লিখেছেন বরেণ্য এই অভিনেতা। প্রথম দিকে কৌতুক অভিনেতা হিসেবে চলচ্চিত্রে প্রবেশ করলেও ১৯৭৬ সালে আমজাদ হোসেনের ‘নয়নমনি’ চলচ্চিত্রে খলনায়কের ভূমিকায় অভিনয় করে দশর্কের কাছে পরিচিতি পান তিনি। এর পর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি এই গুণী অভিনয়শিল্পীকে। টেলিছবি, নাটকসহ রূপালি পর্দার নানা শাখায় স্বগৌরবে বিচরণ করেছেন তিনি। গত ২৬ এপ্রিল মুক্তিপ্রাপ্ত নাসির উদ্দিনের পরিচালিত ‘আলফা’ চলচ্চিত্রে তিনি সর্বশেষ অভিনয় করেন। ১৯৮৭ সালে কাজী হায়াত পরিচালিত ‘দায়ী কে?’ চলচ্চিত্রে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। রেদওয়ান রনি পরিচালিত ‘চোরাবালি’ ছবিতে অভিনয় করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে পার্শ্বচরিত্রে সেরা অভিনেতার সম্মাননা অর্জন করেন। ‘জলছবি’, ‘যাদুর বাঁশি’, ‘রামের সুমতি’, ‘ম্যাডাম ফুলি’, ‘চুড়িওয়ালা’, ‘মন বসে না পড়ার টেবিলে’ চলচ্চিত্রে তাকে কৌতুক চরিত্রে দেখা যায়। নারায়ণ ঘোষ মিতার ‘লাঠিয়াল’ চলচ্চিত্রে খল চরিত্রে অভিনয় করেন এটিএম। খলনায়ক চরিত্রে অভিনিত তার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হলো ‘অশিক্ষিত’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা’, ‘স্বপ্নের নায়ক’। এ ছাড়াও বেশ কিছু চলচ্চিত্রে তিনি পার্শ্ব-চরিত্রে অভিনয় করেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ‘অনন্ত প্রেম’, ‘দোলনা’, ‘অচেনা’, ‘মোল্লা বাড়ির বউ’, ‘হাজার বছর ধরে’, ‘চোরাবালি’। শাবনূর-রিয়াজ অভিনীত ‘এবাদাত’ নামের চলচ্চিত্রে ২০০৯ সালে প্রথম পরিচালক হিসেবে কাজ করেন তিনি। ১৯৪৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর দৌলতপুরে নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন এটিএম শামসুজ্জামান। গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলার ভোলাকোটের বড়বাড়ি আর ঢাকায় থাকতেন দেবেন্দ্র নাথ দাস লেনে। পড়াশোনা করেছেন ঢাকার পোগজ স্কুল, কলেজিয়েট স্কুল ও রাজশাহীর লোকনাথ হাইস্কুলে। তার বাবা নূরুজ্জামান ছিলেন নামকরা উকিল এবং তিনি শেরেবাংলা একে ফজলুল হকের সঙ্গে রাজনীতি করতেন।
Leave a Reply