রুবেল ভাইয়ের পরামর্শ, তত্ত্বাবধায়নে গত ৬ বছরে উনাকে নিয়েই ১টি ফিল্মের চিত্রনাট্য লিখে রেখেছি। তাছাড়া জেলেপাড়ায় বসে যে ফিল্মের চিত্রনাট্য লিখছি সেখানেও রুবেল ভাই চরিত্র ছিলো। আহা! রুবেল ভাই! আপনাকে নিয়ে সিনেমা গুলো আর করা হলোনা। সারাজীবনের জন্য আফসোস থাকবে।
২০১৫ সালে Iftekhar Shishir ভাই আমাকে রুবেল ভাইয়ের ছায়াবীথির বাসায় নিয়ে গেলেন। আমাকে তার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন। আড্ডায় নিজের পরিচয়ের পর আব্বা পরিচয় দিলাম। তিনি আমার দিকে তাকিয়ে বললেন- আমার সুভাগ্য হয়েছে তোমার আব্বুকে খুব কাছ থেকে দেখার। উনি আমাদের বাসায় নিয়মিত আসতেন। তাছাড়া ঢাকা শিল্পকলায় তোমার আব্বুর নাটক দেখে আমি মুগ্ধ হই। উনার ভরাট কন্ঠে আমার খুব প্রিয়।
এমন একজন শক্তিমান অভিনেতার মুখে নিজের বাবার কথা শুনতে কার না ভালো লাগে। রুবেল ভাইয়ের অভিনয়ের ভক্ত আমি এবং আমার পরিবার। তাছাড়া আগে থেকেই উনাকে চিনি, জানি, বহুবার দেখা হয়েছে কিন্তু কথা হয়নি। তারপর সেই আড্ডায় শিশির ভাইয়ের সাথে ঘন্টা খানিক কথাবার্তা চালিয়ে গেলেন। আমি মুগ্ধ হয়ে উনার ভরাট কন্ঠ কথা শুনছিলাম। তারপর থেকে ভাইয়ের সাথে আমার নিয়মিত যোগাযোগ ছিলো। প্রায় সময় আইডিয়া, গল্প লিখে পাঠাই। উনি পড়ে বলতেন- গল্পটা দারুন। ভালোতো।
গতবছর ঢাকা কাউন্সিল অডোটরিয়াম ‘লতিকা’ প্রদর্শনী হবে। ভাইকে আমন্ত্রণ জানিয়ে কল দিলাম। ভাই ধমকের সুরে বললো- ঐ মিয়া, তুমি আমারে নিয়ে কবে সিনেমা বানাইবা সেটা কও? আমি ভয়ে পেয়ে বললাম- সরকার যদি অনুদান দেয়। আমারতো টাকা নেই। তিনি হেসে দিয়ে বললেন- শরীর ভাল থাকলে আসমুনে। তিনি আসতে পারেননি। ফিল্মের জন্য যখন বিদেশি ফান্ড পেয়েছি শোনে কল দিয়ে বললো- তুমি আমাদের গর্ব। লেগে থাকো। গোপনে যেই মানুষের অভিনয়ের জন্য পূজো করি তিনি রুবেল ভাই। খুব মিস করবো আমরা।
সকালে আন্তর্জাতিক প্রামাণ্য চলচ্চিত্র উৎসব অংশগ্রহন করতে চট্টগ্রাম আসি। উৎসবের শুরুতে রুবেল ভাইকে স্বরণ করে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। আগামীকাল আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দ্য চট্টগ্রামে আমার ফিল্ম ‘লতিকা’ সাথে ফ্রান্স, ভারতের ছবি প্রদর্শনী হবে। খুব ইচ্ছে থাকা সত্তেও রুবেল ভাইয়ের জানাজার নামাজে থাকতে পারিনি। সারাদিন খুব মন খারাপ ছিলো। দোয়া করি। আল্লাহ পাক ভাইকে জান্নাতবাসি করুক।
পাথরঘাটা, চট্টগ্রাম
০৮-০২-২০২৪
Leave a Reply