আলাউদ্দিন রাসেল, নিজস্ব প্রতিবেদক :
গ্রন্থাগারে বই পড়ি,স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ি এই প্রতিপাদ্য নিয়ে দেশের অন্যান্য স্থানের মতো টঙ্গীতে ৫ ফেব্রুয়ারি রোজ সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় শুচি পাঠচক্র ও পাঠাগার কার্যালয়ে জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস পালিত হয়েছে। শুচি পাঠচক্র ও পাঠাগার আয়োজন করে আলোচনা, কবিতা ও ছোট গল্প পাঠ। সংগঠনের সভাপতি আসম জাকারিয়া সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান শোভনের পরিচালনায় আলোচনা করেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, টঙ্গীর সাবেক সভাপতি নিজাম উদ্দিন, বৃহত্তম কুমিল্লা সমন্বয় পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক সাদেক হোসেন, সাংবাদিক উন্নয়ন কেন্দ্রের সভাপতি শেখ অলিদুর রহমান অলি, টঙ্গী থিয়েটার সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক উজ্জল লস্কর, কবি আতিক শাহারিয়ার, মেঘদূত থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক শাহীন কাওছার, নাট্যকমীর্ মো: রাসেল, এস এম টুটুল বাঙালী, কবি ফায়াদ হাওলাদার, শফিক আলী খান, জান্নাত, আদিতা প্রমূখ।
আলোচনায় নিজাম উদ্দিন বলেন, জাতীয় গ্রন্থাকার দিবসের তাৎপর্য বহুমুখী। প্রথমত গ্রন্থপাঠ ব্যতীত একটি জাতির আত্ম বিকাশ সম্ভব নয়। কিন্তু মানুষকে পাঠের সঙ্গে যুক্ত করার সবচেয়ে বড় ক্ষেত্র বিদ্যাপীঠ, যেখানে পাঠকে ক্রমান্বয়ে গুরুত্বের সঙ্গে দেখার চেয়ে গুরুত্বহীন করে তোলা হচ্ছে। শিক্ষার্থীর প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়ার চাপ নানানভাবে এতোটাই বৃদ্ধি পাচ্ছে যে শিক্ষার্থীরা সৃজনশীল পাঠ থেকে ক্রমান্বয়ে সরে যেতে বাধ্য হচ্ছে। অভিভাবকরাও সন্তানের লেখাপড়া নিয়ে নানান ভাবে চাপে আছেন। মূলত আমাদের সন্তানরা সারাদিন পড়ছে অপাঠ্য বই। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সমগ্র পুস্তককে দুই ভাগে ভাগ করেছেন, পাঠ্য বই এবং অপাঠ্য বই। যেসব বই শিক্ষার্থীরা নিজের আগ্রহে পড়ে সেগুলো পাঠ্যবই। আর যেগুলো শিক্ষার্থীকে জোর করে পাঠ করানো হয় সেগুলো অপাঠ্য বই। কাজেই এ থেকে পঠন—পাঠনের প্রকৃতি সহজে নির্ণয় করতে পারি ।
রাষ্ট্রীয় খরচে অনেক ক্ষেত্রে গ্রন্থাগার তৈরি হলেও পাঠক নেই। পাঠকের সময়ও নেই। তো কতগুলো বুক সেল গ্রন্থাগার টাকা থাকলে এগুলো সংগ্রহ করা সম্ভব, কিন্তু পাঠকের মনন তৈরি না হলে পাঠকের অভাব তো হবেই। পাঠাগারের জন্য চাই সুন্দর পরিবেশ। আমাদের সমাজে অনেক ধনাঢ্য ব্যক্তি আছেন, তারা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দান ছদকা করেন কিন্তু পাঠাগার তৈরির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন না। আবার আমরা জ্ঞান ভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলতে চাই, নিজেদের সন্তানদের শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে চাই, কিন্তু জ্ঞানের চর্চা বা কদর করি না। জ্ঞানের চর্চা বা কদর না করলে একটি সমাজ জ্ঞানভিত্তিক হয়ে উঠতে পারে না। জ্ঞানের বিকাশ নাহলে আমরা অন্ধকারে তলিয়ে যাবই। যে যত কথাই বলি না কেন আমাদের কেউ বাঁচাতে পারবে না।
Leave a Reply