বস্তুবাদী বা লোকায়ত দর্শন হলো পরিশ্রমজীবীদের দর্শন আর ভাববাদ হলো পরশ্রমজীবীদের দর্শন।
এ প্রসঙ্গে বলতেই হয়- প্রাচীনকালে প্রাচীন ভারতে দর্শন বলতে কেবল লোকায়ত দর্শনই বোঝাতো। লোকায়ত শব্দের অর্থ বস্তবাদী। সংস্কৃত ‘লোক’ শব্দের আদি অর্থের সাথে চাষের জমির সম্পর্ক আছে বলে মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। লোক শব্দ থেকেই লোকায়ত শব্দের উৎপত্তি। সুপ্রাচীন কালে জনসাধারণ কৃষিকাজের সাথে যুক্ত ছিলেন এবং তারা প্রত্যেক বস্তুর মাঝেই প্রাণের প্রকাশ দেখেছে। তাদের চিন্তা, ভাবাদর্শ ও দর্শন কৃষির সাথে সম্পৃক্ত জীবন সংগ্রামের অভিজ্ঞতা থেকে উৎসারিত হয়েছে। তাই আদি যুগে জনসাধারণের দর্শন ছিলো লোকায়ত দর্শন।
পরবর্তীতে, প্রাক প্রাচীনকালে ব্রাহ্ম সমাজের সৃষ্টি হয় এবং ব্রাহ্মসমাজ নিজেরা কোন কাজ করতো না। তারা মূলত ধর্ম প্রচার করতো এবং এরা ছিলো অভিজাত সমাজ। এরা ছিলো পরশ্রমজীবী। এদের দৃষ্টিভঙ্গি, চিন্তা ও দর্শন ছিলো ভাববাদী দর্শন এবং পরিশ্রমজীবী মানুষের লোকায়ত দর্শন থেকে আলাদা।
সেই থেকেই দর্শনের দুই ধারা প্রবাহমান।
১. লোকায়ত বা বস্তবাদী দর্শন
২. ভাববাদী দর্শন
পরশ্রমজীবীরা বস্তুর চেয়ে ভাবকেই প্রদান করে তোলেন, তাদের দর্শন হয় মূলত ভাববাদ আশ্রয়ী।
আর পরিশ্রমজীবীরা জীবনসংগ্রামের সূত্রেই নিরেট বস্তুজগতের সঙ্গে সংযুক্ত বলে তাঁদের দর্শনে থাকে বস্তুবাদেরই প্রাধান্য।
শওকত আলী
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
Leave a Reply